Skip to main content

কম্পিউটার বচন

কম্পিউটারের সাথে আমার পরিচয় খুব ছোট বয়সে না। অন্তত চেনাপরিচিত বন্ধুমহলের অনেকের তুলনায় আমি বাচ্চাই বলা চলে। ক্লাস ২ বা ৩ তে পড়ি যখন ফুফাতো ভাই প্রথম কম্পিউটার কেনে। ফুফুর বাসা কাছেই হওয়ায় মাঝে মাঝেই সেটা দেখার সৌভাগ্য হতো। কিন্তু ছুয়ে দেখার সাহস তখনও হয়নি। সেই বছর থেকে আমাদের রেওয়াজ, ঈদের দিন নামাজ পড়েই সোজা ভাইয়ার রুমে। ভাইয়া নতুন একটা গেম ইন্সটল করে রাখতো আর আমরা কাজিনেরা লাইন দিয়ে সেটা খেলতাম (যদিও আমার ভাগে কমই পড়তো :p ) 

ক্লাস সিক্সে নতুন স্কুলে ভর্তি হলাম। এ এক আজব জায়গা। সবাই বড়লোকের পোলাপাইন। কতজন গাড়িতে করে আসে। তাদের তো কথাই নাই। যাদের গাড়ি নাই তাদেরও রোজকার বাজেট বিশাল। ইচ্ছামত উড়ায়। আর আমি মধ্যবিত্তের ছেলে। যাওয়া আসার ভাড়া বাদে কোনো টাকা পেতামনা। টিফিন বাসা থেকে বানায়ে দিতো। এই যখন আমার অবস্থা তখন ক্লাসমেটরা নিত্যনতুন গ্যাজেটের সাথে শুধু পরিচয়ই না, পকেটে নিয়ে ঘুরে (যদিও স্কুলে নিষিদ্ধ ছিলো )। সবাই এসব নিয়ে কত গল্প চালায় যায়। আর আমার মত বোকা কিছু পাবলিক হা করে এদের গল্প শুনি। কম্পিউটারের কত বচন, কত আড্ডা। এসব আড্ডায় ঢুকতে কত ইচ্ছা করতো, কিন্তু ঢুকবো কি করে? আমার কম্পিউটার জ্ঞ্যান হিমাংকেরও নিচে। 

সেভেনে থাকার সময় খালাতো ভাই কম্পিউটার কেনে, তখন থেকেই কম্পিউটারের সাথে আসল পরিচয়। জিটিএ ভাইস সিটি, এইজ অফ এম্পায়ার ইত্যাদি খেলার ফাঁকে ফাঁকে ভাইয়া আমাকে ছোট ছোট ট্রিক দেখাতো। মজা পেতাম। ততদিনে স্কুলের কম্পিউটার রিলেটেড আড্ডায় ঢুকার সাহসও পেয়ে গেছি। 

এস.এস.সি. পরীক্ষার আগে আব্বুর সাথে এক প্রকার চ্যালেঞ্জ লেগেছিলাম, যে গোল্ডেন এ+ পেলে কম্পিউটার কিনে দিতে হবে। জিতেছিলাম, আব্বুও হেরে খুব খুশী। অবশেষে কম্পিউটার কেনা হলো। সরকার বাড়ির প্রথম কম্পিউটার। কিন্তু বিধিবাম, কম্পিউটার সেটআপ করার পরেও চালু হয়না। অনেক খুঁজাখুঁজি করে বুঝা গেলো মনিটরের ক্যাবল ভুল লাগানো হয়েছে। ভুল শুধরানো হলো। ছোট বোন কে দিয়ে পাওয়ার সুইচ অন করিয়ে কম্পিউটারের শুভ উদ্বোধন করানো হলো। তারপর আর আমাকে দেখে কে। সারাদিন কম্পিউটারের সামনে। বন্ধুদের কাছ থেকে গেমের ডিস্ক আনতাম আর খেলতাম। তখন পর্যন্তও কম্পিউটার মানে আমার কাছে শুধু গেম খেলা, মুভি দেখা আর গান শোনার মেশিন। ইন্টারনেটে কানেক্টেড ছিলামনা বলে তেমন কিছু করারও সুযোগ নাই।

আজকে সেই দিনগুলার কথা মন পড়লে মজাই লাগে। কম্পিউটার নিয়ে এত স্বল্পজ্ঞ্যান থাকার পরেও এস.এস.সি. পরীক্ষার পরেই ঠিক করেছিলাম যে কম্পিউটার সায়েন্টিস্ট হবো। অথচ ভার্সিটির প্রথম ক্লাসের আগে আমার প্রোগ্রামিং সম্পর্কে ধারনাটুকুও ছিলোনা। সেই অবস্থার সাথে আজকের কত পার্থক্য। কত কি শিখি, কত কি বানাই। যত শিখি ততই দেখি সামনে আরো কত কি আছে সেগুলা জানিনা। যতই জানি ততই নিজেকে অজ্ঞ মনেহয়। তবে গুরুজনেদের উপদেশে লেগে আছি, দেখি কি হয়। 

Comments

  1. valo laglo golpota pore ............. 1st computer kenar por amaro emon hoisilo monitor er switch off kora chilo buji nai :D

    ReplyDelete
    Replies
    1. :D প্রথম সবকিছুতেই বিড়ম্বনা থাকে...থাকা ভালো...না থাকলে তো স্মরণীয় হবেনা

      Delete
  2. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  3. তোর SSC এর পর আর আমার HSC. কিন্তু তারা এখনও গেম আর মুভি নিয়েই আছে আর আমরা গেমের পাঠ চুকিয়ে কাজের মধ্যে ধুকে গেছি।

    ReplyDelete

Post a Comment

Some of My Bests

ডাটা স্ট্রাকচার- স্ট্যাক (Stack)

Programming is all about data manipulation. Data structure is way of storing data for further manipulation. ডাটা স্ট্রাকচার আমাদেরকে বিভিন্ন ডাটা সাজিয়ে রাখার ব্যবস্থা করে দেয়। ডাটা সাজিয়ে রাখার অনেক গুলো "তরিকা" আছে। কোনকিছু আমরা কেন সাজিয়ে রাখি? যেন পরে নির্দিষ্ট একটা ডাটা সহজে খুঁজে পেতে পারি। "তরিকা" গুলোর নাম Array, Stack, Queue, Linked List, Tree, Graph. এগুলা শ খানেক ডাটা স্ট্রাকচারের মধ্যে কিছুর নাম, যেগুলো অনেক বেশি ব্যবহার হয়। এই পোস্টটা স্ট্যাক বুঝানোর জন্য। স্ট্যাক খুবই ইন্টেরেস্টিং একটা ডাটা স্ট্রাকচার। অনেক কারনেই এটা ব্যাবহার হয়। আগে স্ট্যাক কনসেপ্টটা নিয়ে আলোচনা করা যাক। স্ট্যাক বলতে বোঝায় একটার উপর একটা সাজায়ে রাখা। বিয়ের বাড়িতে আগে মেলামাইনের গ্লাস দেখা যেত একটার ভেতর আরেকটা ঢুকায়ে লম্বা একটা পাইল তৈরি করে একসাথে ক্যারি করা হচ্ছে। এটা একটা স্ট্যাক। প্রোগ্রামিং এর ভাষায় স্ট্যাক এক্সাক্টলি সেইম জিনিসই। তবে একটু ঘষামাজা আছে। আরেকটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। বয়ামের ভেতর একটার পর আরেকটা বিস্কিট ঢুকিয়ে রাখা হয়। হ্যা, এইটা পারফেক্ট উদাহরণ হয়েছে। এই...

ডাটা স্ট্রাকচার- কিউ (Queue)

Programming is all about data manipulation. Data structure is way of storing data for further manipulation. ডাটা স্ট্রাকচার আমাদেরকে বিভিন্ন ডাটা সাজিয়ে রাখার ব্যবস্থা করে দেয়। ডাটা সাজিয়ে রাখার অনেক গুলো "তরিকা" আছে। কোনকিছু আমরা কেন সাজিয়ে রাখি? যেন পরে নির্দিষ্ট একটা ডাটা সহজে খুঁজে পেতে পারি। "তরিকা" গুলোর নাম Array, Stack, Queue, Linked List, Tree, Graph. এগুলা শ খানেক ডাটা স্ট্রাকচারের মধ্যে কিছুর নাম, যেগুলো অনেক বেশি ব্যবহার হয়। এই পোস্টটা কিউ বুঝানোর জন্য। কিউ জিনিসটার সাথে আমরা সবাই পরিচিত। জীবনে আমরা সবাই কখনো না কখনো লাইনে দাঁড়ায়ছি। কিউ এর বেসিক ক্যারেক্টারিস্টিকসের সাথে মিলিয়েই প্রোগ্রামিং এ কিউ এর কনসেপ্ট। বাস্তব জীবনে একটা কিউ তে কি হয়? সবাই লাইন ধরে দাঁড়ায় কিছু একটা কারনে। যে সবার আগে দাঁড়ায় সেই সবার আগে কার্জসিদ্ধি করে। সবার পরের জন সবার পরে। স্ট্যাকের ক্ষেত্রে আমরা পড়েছিলাম Last In First Out (LIFO) or First In Last Out (FILO)। কেমন আনফেয়ার শোনায় না? সবার পরে আসবে, আবার সবার আগে চলে যাবে। অ্যাটলিস্ট আমার আনফেয়ার লেগেছিলো যখন স্ট্যাক শিখছিল...

Building a Tic Tac Toe Console Game in C#

When learning a new programming language, a common exercise is to create a classic game, such as Tic Tac Toe. In this post, I'll guide you through creating a simple, console-based Tic Tac Toe game in C#. First, let's start with the challenge we're trying to solve: Tic Tac Toe is a two-player game. We need to handle input from two players and alternate between them. The game is played on a 3x3 grid. We need to keep track of the state of this grid. A player wins by marking three spots in a row, either horizontally, vertically, or diagonally. The game continues until a player has won or all spots on the grid have been marked, in which case the game is a draw. To address these challenges, we need to develop a problem-solving mindset. Let's break down the problem into smaller, manageable pieces and think about how we could solve each one. This process is known as "decomposition" and it's a fundamental skill in programming and problem-solving in general. Step 1:...